জামিল আহমেদ শাকিল প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ :
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদী খনন ও সংস্কার প্রকল্পের বাস্তবায়ন হওয়ায় দীর্ঘ ৫৯ বছর পর কাটাখালিতে প্রবেশ করেছে যমুনা নদীর পানি। এতে খালের দুই পাড়ের সব ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার হয়ে চলে যাচ্ছে যমুনায়। প্রায় পাঁচ যুগ পর স্বস্তি মিলেছে সিরাজগঞ্জবাসীর।
জানা যায়, সিরাজগঞ্জ শহরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত বড়াল নদী, যা কাটাখাল নামে পরিচিত। ব্রিটিশ সরকারের আমলে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের লক্ষ্যে এ খালটি খনন করে যমুনা নদীর সাথে সংযোগ করা হয়।
সিরাজগঞ্জ শহরের মাঝখানে কাটাখালির উপর ১৮৮২ সালে নির্মিত হয় একটি দৃষ্টিনন্দন সেতু। ১৮০ ফুট লম্বা আর ১৬ ফুট চওড়া এ সেতুটির অন্যতম বৈশিষ্ট হলো এর কোনো পিলার নেই। স্টুয়ার্ট হার্টল্যান্ড নামের ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ারের তৈরি এই পিলারবিহীন সেতুটির নামকরণ করা হয় ইলিয়ট ব্রিজ। ওই সময়ে এ ব্রিজটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল প্রায় ৪৫ হাজার টাকা।
এদিকে, নানা অব্যবস্থাপনায় ১৯৬২ সালে এ খালটির বাঐতারা প্রান্তের স্লুইচ গেটের মুখ বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে কাটাখালির পানি প্রবাহ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। ময়লা-আবর্জনার ভাগারে পরিণত হয় শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা এ খালটি। এর মধ্যে দফায় দফায় কাটাখালি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হলেও সেটা সফলতার মুখ দেখেনি।
অবশেষে ২০১৯ সালে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পের আওতায় পানি উন্নয়ন বিভাগ কাটাখালি পুনঃখনন কাজ শুরু করে। ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ২২ কিলোমিটার এ খালটি খনন শুরু হয়।
এদিকে, যমুনার পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে বাঐতারা স্লুইচ গেটের মুখ ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে কাটাখালিতে পানি ঢুকেছে। দীর্ঘ দিন পর পানি ঢোকায় স্বস্তি ফিরেছে সিরাজগঞ্জবাসীর মনে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, যমুনার পানি ঢোকাতে সিরাজগঞ্জের ময়লা-আবর্জনা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি থেকে শহরবাসী মুক্ত হয়েছে। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে, এই কাটাখালিতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ছাড়া হবে, যাতে কাটাখালিতে স্বচ্ছ পানি প্রবাহ হয়।
Tags
দেশের খবর