জরুরি খবর:
যেসব বাংলাদেশি সিনোফার্মের টিকা নিয়েছেন তারা ওমরাহ বা হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যেতে পারবেন না। দেশটিতে যেতে হলে সংশ্লিষ্টদের অবশ্যই সৌদি সরকারের অনুমোদিত টিকা নিতে হবে। এ নিয়ম সৌদি আরবে বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্যও প্রযোজ্য। এ কারণে দ্রুত সৌদি সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টির সুরাহা করার তাগিদ দিয়েছে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। গতকাল রবিবার ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে এ আহ্বান জানানো হয়েছে।
১৩ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে ১ কোটি ৪৫ লাখ ৭০ হাজার সিনোফার্মের টিকা এসেছে। সেই হিসাবে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি এই ভ্যাকসিন নিয়েছেন।
সেমিনারে যুক্ত হয়ে সৌদি আরবের জেদ্দায় বাংলাদেশ হজ কাউন্সেলর মো. জহিরুল ইসলাম জানান, সৌদি আরবে যেতে হলে অবশ্যই সৌদি সরকারের নির্দেশিত ভ্যাকসিন নিতে হবে। এখনই বিষয়টি নিয়ে কাজ করলে সিনোফার্মের টিকার বিষয়ে সৌদি সরকার ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
হাব সভাপতি শাহাদাত হোসাইন তসলিম জানান, সিনোফার্মের টিকা ওমরাহ যাত্রীদের জন্য সৌদি আরব কর্তৃক অনুমোদিত নয়। কিন্তু বাংলাদেশে বর্তমানে সিনোফার্মের টিকাই দেওয়া হচ্ছে। সিনোফার্মের টিকা যাতে সৌদি কর্তৃপক্ষ অনুমোদন করে, সে জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো প্রয়োজন। অথবা বাংলাদেশি ওমরাহ যাত্রীদের জন্য সৌদি সরকার নির্ধারিত ফাইজার, মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, জনসন অ্যান্ড জনসন এসবের যেকোনো একটি টিকা দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে। ওমরাহ যাত্রী ফ্লাইটে ওঠার আগে পিসিআর টেস্ট পজিটিভ হলে যাতে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হন সে বিষয়ে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। হজ বা ওমরাহ যাত্রীর টিকিট এবং হোটেল যেন পুনরায় বুকিং করা যায় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। ওমরাহ যাত্রীদের বর্তমানে সৌদি এয়ারলাইনস ও বিমানের প্রকাশিত ভাড়া অনেক বেশি। নির্ধারিত ভাড়া কমানোর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার বলে তিনি জানান।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, ওমরাহর যাত্রী ফ্লাইটে ওঠার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পিসিআর টেস্ট করাতে হবে, পজিটিভ এলে যেতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে প্রবাসীদের টিকিট রিশিডিউল করা হয়। ওমরাহ যাত্রীদের ক্ষেত্রেও তা-ই করা উচিত। সিনোফার্মের টিকা নিয়ে ওমরাহ করার বিষয়ে সৌদি আরবের নির্দেশনা প্রয়োজন।
বাংলাদেশে সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউছুফ ঈসা আলদুহাইলান বলেন, কভিড মহামারীর কারণে ৬০ হাজার যাত্রীর ওমরাহ পালনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও ভবিষ্যতে তা বাড়ানো হবে। ধর্ম সচিব মো. নূরুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে ২৪৭টি ওমরাহ এজেন্সির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। আরও তালিকা প্রকাশ করা হবে। ওমরাহ যাত্রীদের বিমান ভাড়া কমানোর বিষয়েও তিনি একমত পোষণ করেন।
হাব সভাপতি শাহাদাত হোসাইন তসলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, বিশেষ অতিথি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। এ ছাড়া ধর্ম সচিব মো. নূরুল ইসলাম, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশে সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউছুফ ঈসা আলদুহাইলান সংযুক্ত ছিলেন। বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল ও সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস কান্ট্রি ম্যানেজার তারিক এ আল-ওয়াইদিও সংযুক্ত ছিলেন।