মো: ইমরুল হাসান, রংপুর জেলা প্রতিনিধি:
রংপুরে নিম্নমানের ইউরিয়া সার সরবরাহ ও বিক্রি বন্ধের দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট। সংগঠনটির অভিযোগ, বর্তমানে ভেজাল সার ও কীটনাশকের সরবরাহ বাড়াতে কৃষকেরা প্রতারিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সঙ্গে ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। নিম্নমানের সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কারণে ফসলের ক্ষতি হলেও কৃষকরা পাচ্ছেন না ক্ষতিপূরণ।
রোববার (২৯ আগস্ট) দুপুরে রংপুর নগরীর কাচারি বাজার চত্বরে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এ অভিযোগ তোলা হয়। এর আগে সকালে রংপুর প্রেসক্লাব চত্বর থেকে বের হওয়া একটি বিক্ষোভ মিছিল গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সমাবেশে গিয়ে মিলিত হয়। পরে তারা দাবি আদায়ে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
সংগঠনটির নেতারা অবিলম্বে ভেজাল সার ও কীটনাশকের কারণে ফসলের ক্ষতি হলে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করার দাবি জানান। একই সঙ্গে সয়ারিন তেল, চিনি, চাল, ডাল ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমানো, ক্ষেতমজুরদের সারা বছর কাজের ব্যবস্থা, গ্রাম ও শহরে শ্রমজীবীদের জন্য আর্মিরেটে রেশনিং পদ্ধতি চালুর দাবি তোলেন।
সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা বাসদ আহ্বায়ক আব্দুল কুদ্দুস, সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক অমল সরকার, কৃষকনেতা গোলাম রব্বানী, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির নেতা আব্দুল জলিল, আতিয়ার রহমান, মনোয়ার হোসেন প্রমুখ। এতে কৃষক ফ্রন্টের জেলা কমিটির সভাপতি মমিনুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন।
বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন থেকে জমাটবাঁধা ইউরিয়া সার ডিলারদের মাধ্যমে কৃষকদের কাছে বিক্রি হচ্ছে। সরকারি সার গুদামে দীর্ঘদিনের জমাটবাঁধা সার নতুন ব্যাগে রিপ্যাকেটিং করে ডিলারদের মাধ্যমে কৃষকদের কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। সরকারদলীয় প্রভাবশালী কয়েকজন ডিলার ছাড়া অন্য ডিলারদের কাছ থেকে বাফার দায়িত্বপ্রাপ্তরা উৎকোচও আদায় করে আসছে। এসব অনিয়ম, দুর্নীতির বিষয়ে জানার পরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নীরব।
অবিলম্বে নিম্নমানের ভেজাল সার সরবরাহ ও বিক্রি বন্ধের দাবি তোলেন বামধারার এ সংগঠনটি। একই সঙ্গে ভেজাল বীজ, সার ও কীটনাশক ব্যবহারে ফসলের ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণ প্রদান ও মাঠপর্যায়ে সরকারি তদারকি নিশ্চিতের জোর দাবি জানানো হয়।
বক্তারা আরও বলেন, সরকার নিজেদের কৃষি ও কৃষকবান্ধব দাবি করলেও বাস্তবে তা উল্টো। গ্রাম-শহরে শ্রমজীবীদের কাজ নেই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। বর্তমানে তেল, চিনি, চাল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। দিন দিন সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষেতমজুরদের সারা বছর কাজ, শ্রমজীবীদের আর্মিরেটে রেশন, প্রত্যেক ওয়ার্ডে বা ইউনিয়নে টিসিবি ও ওএমএস সুবিধা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
Tags
দেশের খবর