আমতলীতে সভাপতির বিএ পাশের সার্টিফিকেট জাল হওয়ার অভিযোগ


  
জেলা প্রতিনিধি পটুয়াখালী 

বরগুনা জেলায় আমতলী উপজেলার   বকুল নেছা মহিলা কলেজের সভাপতির বিএ পাশের সাটিফিকেট জাল প্রমানিত হয়েছে। মঙ্গলবার জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক ফাহিমা সুলতানার স্বাক্ষরিত আদেশ আমতলীতে পৌছলে টক অব দ্যা টাউনে পরিনত হয়। এর আগে ওই কলেজের অধ্যক্ষের বিএ পাশের সার্টিফিকেট জাল প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়।
জানা গেছে আমতলী উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদিকা মাকসুদা আকতার জোসনাকে বরগুনা জেলার আমতলী বকুল নেছা মহিলা কলেজে ১২ /৭/২০২১ইং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাডহক কমিটির সভাপতি নিয়োগ দেয়। বিধি অনুযায়ী কমপক্ষে বিএ পাশের সার্টিফিকেট জাতীয়
 বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দিতে হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় মাকসুদা আকতার জোসনাকে সভাপতি পদে নিয়োগ দিলেও তাঁর সার্টিফিকেট নিয়ে সন্দেহের সৃস্টি হয়। মাকসুদা আকতার জোসনার দাখিলকৃত সার্টিফিকেটটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় যাচাই বাচাই করে ১৫ সেপ্টেম্বর ৫১১৩৩(৪) নম্বর স্মারকে একটি অফিস আদেশ দিয়েছেন জাতীয় 
বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক ফাহিমা সুলতানা। তাঁর আদেশে উল্লেখ করেছেন, বরগুনা জেলার বকুল নেছা মহিলা কলেজের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি মাকসুদা আকতার জোসনার জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে ইস্যুকৃত বিএসএস সনদটি যাচাই বাচাই করে তথ্য সঠিক পাওয়া যায়নি। এ বিষয়টিসহ বর্তমান অধ্যক্ষ মো: ফোরকান মিয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদ যাচাই, কলেজের একাডেমিক বিষয় প্রশাসনিক ও আর্থিক বিষয় সরেজমিনে পরিদর্শনের লক্ষ্যে বরিশাল আঞ্চলিক কেন্দ্র, জাতীয় 
বিশ্ববিদ্যালয়কে মনোনয়ন দিয়েছে। আমতলী বকুল নেছা কলেজের অধ্যক্ষ মো: ফোরকান মিয়াও বিএ পাশ না করে এমএ পাশের সার্টিফিকেট দিয়ে ১৯৯৯ সাল হতে ওই কলেজে চাকরী করে আসছেন। এ কারনে ফোরকান মিয়া দীর্ঘদিন জেল হাজতে থাকার পরে ২০১৩ সালে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে চলে যায়। দীর্ঘদিন পর পদত্যাগী ফোরকান মিয়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তদ্বির করে মাকসুদা আকতার জোসনাকে আমতলী বকুল নেছা মহিলা কলেজের
সভাপতি করে আনার পরে তিনি ১৫ জুলাই সভাপতির ক্ষমতায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে সরিয়ে নতুন ভাবে অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে যায়।

ঐ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মজিবুর রহমান বলেন, ফোরকান বিএ পাশ না করে জাল সার্টিফিকেট দিয়ে বকুল নেছা কলেজে চাকরী করায় আমি ( মজিবুর রহমান)বাদী হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে আমতলী আদালতে মামলা করেছি। এ কারনে দীর্ঘদিন জেল হাজতে ছিল ফোরকান। মামলাটি এখন বরগুনা জজ কোর্টে বিচারাধীন। হঠাৎ করে জাল সাটিফিকেট ধারী ফোরকান সহজ সরল মহিলা নেত্রী মাকসুদা আকতার জোসনার নামে আবার একটি জাল সার্টিফিকেট সৃস্টি করে সভাপতি করিয়ে আনেন। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ভাবে জাল সাটিফিকেট দিয়ে শীর্ষ পদ গ্রহন করা শিক্ষার্থীদের মধ্য বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। আমার মনে হয় মাকসুদা আকতার জোসনার এমএ পাশের সার্টিফিকেটও জাল। 

জাল সার্টিফিকেট বিষয়ে মাকসুদা আকতারের কাছে জানতে চাইলে  জোসনা বলেন, আমি ২০০৪ সালে আমতলী ডিগ্রী কলেজ থেকে বিএ পরীক্ষা দিয়ে এক বিষয় ফেল করি। আমার রেজাল্ট রি কাউন্টের জন্য স্যারদের টাকাও দিয়েছি। ভুল করলে স্যারেরা করছেন। আমি এলএলবি এবং ইংরেজিতে এমএ পাশও করেছি। 

দুইদিন আগে নিয়োগ পাওয়া বকুল নেছা মহিলা কলেজের গভর্ণিং বডির বর্তমান সভিপতি গোলাম সরোয়ার টুকু বলেন, আমি দু দিন আগে অ্যাডহক কমিটির সভিপতি পদে নিয়োগ পেয়েছি। ফোরকান মিয়া আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, আমি বকুল নেছা কলেজের অধ্যক্ষ। মজিবুর রহমান বলেন, আমি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। তবে আমি অল্প দিনের মধ্য যাচাই বাচাই করে সিদ্ধান্ত নেব, কে অধ্যক্ষ আর কে অধ্যক্ষ নয়। এ ছাড়া সাবেক সভাপতি মাকসুদা আকতার জোসনা যদি জাল সার্টিফিকেট সরকারী দফতরে দাখিল করে থাকেন এবং সেটি জাল প্রমানিত হয় তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post